প্রকাশিত: Thu, Apr 27, 2023 4:30 AM
আপডেট: Fri, Jun 27, 2025 1:13 PM

আইএমএফের শর্ত পূরণে আবারও বাড়ছে বিদ্যুতের দাম

মনজুর এ আজিজ : চলতি বছরে গ্রাহকপর্যায়ে তিন দফা বিদ্যুতের দাম বাড়িয়েছে সরকার। এদিকে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) থেকে ৪.৭ বিলিয়ন ডলার ঋণের দ্বিতীয় কিস্তি পেতে আগামী জুনের মধ্যে আবারও বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। যা কার্যকর হলে চলতি বছরে চতুর্থবারের মতো বিদ্যুতের দাম বাড়বে। এতে নিম্ন আয়ের মানুষের ওপর বিরূপ প্রভাব পড়বে। এমনিতেই ক্রমবর্ধমান মূল্যস্ফীতির মধ্যে জীবনধারণে হিমশিম খেতে হচ্ছে। তারপরও, আইএমএফ ঋণ প্যাকেজের শর্ত মেনে ভর্তুকির চাপ কমাতে বাধ্য হয়েই কঠিন এ সিদ্ধান্ত নিতে হচ্ছে সরকারকে। সচিবালয়ে আইএমএফ স্টাফ কনসালটেশন মিশনের সঙ্গে এক বৈঠকে এসব কথা জানায় মন্ত্রণালয়।

আট সদস্যের মিশনটি অর্থ বিভাগের সিনিয়র সচিব ফাতিমা ইয়াসমিনসহ অর্থ মন্ত্রণালয়ের সামষ্টিক অর্থনীতি বিভাগ এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের বিভিন্ন বিভাগের সঙ্গে বৈঠক করে। বৈঠকে অর্থ বিভাগের পক্ষ থেকে বলা হয়, সামগ্রিক ভর্তুকি আইএমএফ নির্ধারিত সীমায় আটকে রাখতে সরকার ইতোমধ্যে সারের দাম বাড়িয়েছে। পাইকারি ও খুচরাপর্যায়ে বিদ্যুতের দামও তিন দফা বাড়ানো হয়েছে। গত ফেব্রুয়ারি মাসে দুই দফা এবং মার্চে এক দফা ৫ শতাংশ করে গ্রাহকপর্যায়ে দাম বাড়ানো হয়েছে। এর আগে গত নভেম্বরে পাইকারিপর্যায়ে ১৯ দশমিক ৯২ শতাংশ বিদ্যুতের দাম বাড়িয়েছে সরকার।

আইএমএফ গত ৩০ জানুয়ারি বাংলাদেশের জন্য ৪৭০ কোটি ডলার ঋণ প্রস্তাব অনুমোদন করে। এর তিন দিন পরই প্রথম কিস্তির ৪৭ কোটি ৬২ লাখ ৭০ হাজার ডলার ছাড় করে। ২০২৬ সাল পর্যন্ত সাড়ে তিন বছরে মোট সাত কিস্তিতে দেবে ঋণের পুরো অর্থ। এ ঋণ নিতে ছোট-বড় ৩৮টি শর্ত পূরণ করতে হবে বাংলাদেশকে। শর্তের অন্যতম হচ্ছে, জ্বালানি ও বিদ্যুৎ খাতে ভর্তুকির পরিমাণ কমিয়ে আনার মাধ্যমে সরকারের ব্যয় সক্ষমতা বাড়ানো।

এছাড়া সেপ্টেম্বর থেকে জ্বালানি তেলের দাম আন্তর্জাতিক বাজার দরের সঙ্গে সমন্বয় করা হবে বলেও আইএমএফ এর পর্যালোচনাকারী প্রতিনিধি দলকে নিশ্চিত করেছেন মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা। তাদের এ সিদ্ধান্তে গত আগস্টে পেট্রোল ও অকটেনে ৫০ শতাংশ এবং ডিজেল ও কেরোসিনে ৩৬ শতাংশ দাম বাড়ায় সরকার। শিল্প, বিদ্যুৎ উৎপাদন, হোটেল ও রেস্তোরাঁর গ্যাসের দামও গত ফেব্রুয়ারি থেকে বাড়ানো হয়েছে। প্রাকৃতিক গ্যাসের দামও গত বছরের জুনে গড়ে ২৩ শতাংশ বাড়ানো হয়।

অর্থ বিভাগের হিসাব অনুযায়ী, চলতি অর্থবছরের মূল বাজেটে বিদ্যুৎ খাতে ভর্তুকি বাবদ ১৭ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়। তবুও বিদ্যুৎ বিভাগ অতিরিক্ত ৩২ হাজার ৫০০ কোটি টাকা বরাদ্দ দাবি করে। শেষে সংশোধিত বাজেটে এ খাতে অতিরিক্ত ৮ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে। সম্পাদনা: এল আর বাদল